Tuesday, August 7, 2018

দাঁত ব্যাথা হলে কি করতে হবে ?

দাত থাকলে ব্যাথা থাকবে, মাথা থাকলে ব্যাথা থাকবে। তাই বলে হা হুতাশ করে লাভ নেই। দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন ধরণের সমস্যার কারণে হতে পারে দাঁত ব্যথা। যেমন- ক্যাভিটি, মাড়ির সমস্যা, দাঁতে ইনফেকশন, দাঁত দিয়ে রক্ত পরা, দাঁতের গোঁড়া আলগা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। পাশাপাশি, দাঁতের যথাযথ যত্ন ও সুরক্ষার অভাবেও দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর তখনই শুরু হয় ব্যথা। যেকোনো ব্যক্তির যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে এ সমস্যা। তবে সুষ্টু চিকিৎসায় আরোগ্য সম্ভব।

- দাত ব্যাথার কারন -
১) দৈনন্দিন খাবারের কিছু অংশ দাতের ফাঁকে জমে থাকার কারনে মুখের মধ্যে থাকা  ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে তা এক প্রকার প্লাক সৃষ্টি করে। যা আস্তে আস্তে কঠিন হতে থাকে। এক পর্যায়ে দাত ব্রাশ করেও তা অপসারন করা যায় না। এতে দাতের মধ্যবর্তি স্থানে মাড়িতে প্রদাহ (Inflammation) হয়ে ফুলে যায় এবং রক্ত পড়া শুরু হয়। প্রথম যাত্রায় কম অনুভূত হলেও  ধীরে ধীরে তা অসহ্য ব্যাথার কারন হয়ে দাড়ায়।
২) দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ এর কারণে সৃষ্ঠ রোগ, পালপাইটিস ও আক্কেল দাঁত বা উইজডম দাঁতের অসমান অবস্থানের কারণে, মুখের ভিতরের বিভিন্ন ধরণের ক্ষতের কারনে
ব্যথার কারণ হতে পারে
৩) উইজডম দাঁত বা আক্কেল দাঁতের বেপরোয়া অবস্থান বা বাঁকা অবস্থানের কারনে পাশের দাঁতের উপর চাপ সৃষ্টি করে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
৪) রক্তশূন্যতা, হিমোফিলিয়া, পারফিউরা, ক্যানসার, এমনকি কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায় এবং দাতে ব্যাথা অনুভুত হয়।
৫) অপুষ্টিজনিত কারণে যেমন, ভিটামিন সির অভাবে মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এতে দাতের গোড়া দূর্বল হয়ে পড়ে দাত নড়ে গিয়েও দাত ব্যাথার কারন হতে পারে।
৬) মায়েদের গর্ভাবস্থায় হরমোনের সমস্যাজনিত কারনে মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায় এবং ব্যথা অনুভুত হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে তেমন সমস্যার সৃষ্টি করে না। সন্তান জন্ম নেয়ার পর বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে যায়।

ঘরোয়া চিকিৎসা : ঘরোয়া উপায়ে সহজেই দাঁত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নেই সেই উপায়গুলো সম্পর্কে। 

লবঙ্গ-
এটি দাতের একটি মহৌষধ। ব্যথার স্থানে একটা লবঙ্গ ব্যাথা না কমা পর্যন্ত রাখুন। আরও ভাল ফলাফলের জন্য লবঙ্গ চূর্ণের সঙ্গে পানি বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়েও ব্যাথার স্থানে লাগাতে পারেন।
পেঁয়াজ-
দাতের ব্যাথার স্থান নির্ধারণ করে পেয়াজ কাটা আক্রান্ত স্থানে চিবাতে থাকুন যদি চিবাতে কষ্ট অনুভুত হয় তাহলে কাটা পেয়াজ ব্যাথার স্থানে রাখুন। পেঁয়াজের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান দাঁতের জীবাণু নষ্ট করে দাঁতের ব্যথা উপসমে সহায়তা করে।
রসুন-
রসুনের এন্টিবায়োটিক উপাদান যা বিভিন্ন রোগ প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। তেমনি দাঁতের সংক্রমণ জনিত ব্যথায়ও যথেষ্ট কাজ দেয়। একটি রসুন থেতো করে তাতে পরিমান মত লবন মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন। ব্যাথা কমে গিয়ে আরামবোধ করবেন।
উষ্ণ লবণ পানি-
এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে লবন মিশিয়ে বেশ কয়েকবার কুলি করতে থাকুন। এতে দাতের টিস্যু সচল হয়ে উঠবে। জীবাণুর কারণে দাঁতের ব্যথা হলে তা কমে যাবে। মাড়িতে রক্ত চলাচল বাড়ার কারণে সাময়িকভাবে ব্যাথা কমে আসবে।
ব্যাথানাশক ক্যাপসুল -
ব্যাথানাশক ট্যাবলেট যেমন ডকসিন ক্যাপসুল আক্রান্ত বা ব্যাথার স্থানে দাত দিয়ে চিবিয়ে রাখুন কিছুক্ষন পর ব্যাথা কমে যাবে।
পেয়ারা পাতা -
দাঁতের ব্যথায়  পেয়ারা পাতা পরীক্ষিত।  ২/৩ টা কচি পেয়ারা পাতা পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে দাত দিয়ে চিবোতে থাকুন। কিছুক্ষন পর দেখা যাবে দাঁতের ব্যথায় কাজ শুরু না করে দিয়েছে। তাছাড়া পেয়ারা পাতা গরম পানিতে সিদ্ধ  করে পানি ঠান্ডা করে কুলকুচি করতে থাকুন। দেখবেন ব্যাথা অনেকাংশে কমে গেছে।
শেষ কথা -
ঘরোয়া চিকিৎসায় ফলাফল যতই আমাদের অনুকুলে থাকুক না কেন, মনে রাখতে হবে দাতের রোগ খুবই স্পর্ষকাতর। যথাযথ চিকিৎসা না হলে বড় ধরনের সংক্রমন হতে পারে। নিয়মিত খ্যাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং সঠিক নিয়মে ব্রাশ করতে হবে। দাতের গোড়ায় পাথর জমলে একজন অভিজ্ঞ ডেন্টিস্টের কাছ থেকে দাঁত স্কেলিং করিয়ে নেওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে জানা যায়, সুস্থ দাতের জন্য বছরে ২/১ বার দন্তবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন অবশ্যই দরকার।

Thursday, July 26, 2018


ছাত্র রাজনীতির অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ
ছাত্র রাজনীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদানে নিজেকে গড়ে তোলা। এটা শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে বিশেষ করে অনুন্নত ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিকতা দুর্বল, সেখানে ছাত্র রাজনীতি জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা পালন করে। যেহেতু ছাত্ররা সমাজের অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ সচেতন অংশ, সেহেতু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ছাত্র সমাজের বিশেষ ভূমিকা অনিবার্য হয়ে পড়ে। ১৯৪৮ সালে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার বিপ্লবের মূলশক্তি ছিল ছাত্র সমাজ। জারআমলে রাশিয়ায় ছাত্ররাই বিভিন্ন বিপ্লবী আন্দোলনের সূচনা ঘটায়। এমনকি ১৯৫৫ সালে আর্জেন্টিনায়, ১৯৫৮ সালে ভেনিজুয়েলায়, ১৯৬০ সালে কোরিয়ায় ছাত্র সমাজ পালন করে ঐতিহাসিক ভূমিকা। ১৯৬৪ সালে দ. ভিয়েতনাম ও বলিভিয়ার ক্ষেত্রেও জাতীয় সংকটে ছাত্র সমাজের অবদান ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবেই বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতি ত্রিয়মান কোনো ঘটনা নয়। এদেশও ভূখণ্ডের জন্মের সঙ্গে মিশে আছে ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। বিশেষ করে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৫৪র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-র কুখ্যাত হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬৬-র ঐতিহাসিক ৬ দফা ও ১১ দফা, ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-র নির্বাচন, ’৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনসহ প্রতিটি ঐতিহাসিক বিজয়ের প্রেক্ষাপট তৈরি ও আন্দোলন সফল করার ভ্যানগার্ড হিসেবে তৎকালীন ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা অপরিসীম। পরবর্তীতে ৯১-র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও এদেশের ছাত্র রাজনীতির রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক ভূমিকা। আর এ কারণেই জনগণের কাছে ছাত্র রাজনীতির আলাদা একটা গ্রহণযোগ্যতা আমাদের দেশে ছিল এবং এখনও কিছুটা রয়েছে।

যে সফলতার ইতিহাস এতক্ষণ বললাম সেখানে কারা নেতৃত্বের আসনে ছিল, তাদের বৈশিষ্ট্য কী ছিল, পরবর্তী জীবনে দেশের জন্য তাদের অবদান কী ছিল সেগুলো ব্যাখ্যা না করলে বর্তমান ছাত্র রাজনীতির পোস্টমর্টেম সম্ভব হবে না। ওই সময় ছাত্র রাজনীতিতে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের দূষণ পরিলক্ষিত হয়নি। সবচেয়ে মেধাবী ছাত্ররাই নেতৃত্বে আসতেন এবং তারা সমাজে সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা ও সম্মান পেতেন। ব্যক্তিস্বার্থ বা আর্থিক সুবিধার জন্য কেউ ছাত্র রাজনীতি করতেন না।

 ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে যে ছাত্ররা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে পরবর্তীতে তারা প্রত্যেকেই এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে একেকটি পিলার হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। এমনকি তারা প্রায় সবাই দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছেন। ওই সময়ের ছাত্র রাজনীতির উন্মেষ ঘটেছিল প্রগতিশীল দর্শন হিসেবে, জীবনবোধ ও সৃজনশীলতা তৈরির অনুঘটক হিসেবে কাজ করার জন্য। সেই আমলে ছাত্রদের রাজনীতি ও আন্দোলন করার মধ্যে দেশপ্রেম, জাতীয় স্বার্থরক্ষা এবং অধিকার সচেতনতা ছিল। দেশ ও দেশের মানুষের স্বাধিকার ও অধিকার আদায়ের তীব্র বাসনা কাজ করত ছাত্রদের মধ্যে। বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে তাদের মধ্যে তীব্র আবেগ কাজ করত। যেই আবেগ দিয়ে তারা তথাকথিত পশ্চিমা শিক্ষিতদের কূটকৌশল, সশস্ত্র পাকিস্তানিদের শোষণ আর স্বৈরাচার সামরিক শাসকের বেয়নেটের হুংকারকে পরাজিত করতে পেরেছিল।

গত তিন দশকে ছাত্র রাজনীতির চারিত্রিক ও গুণগত মান ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ৭৫-র পটপরিবর্তন, সামরিক শাসনগুলো ছাত্র রাজনীতিকে বৈষয়িক স্বার্থকেন্দ্রিক করে তোলে। ওই সময়ে ছাত্র রাজনীতি তার চিরায়ত গণমুখী ঐতিহ্য বিসর্জন দিয়ে ক্ষমতামুখী দৃষ্টিভঙ্গি দৃঢ়ভাবে ধারণ করতে শেখে। তাই ছাত্র রাজনীতি আর আধিপত্যের সম্পর্ক একটি আরেকটির অভিযোজন প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্বীকৃত হয়ে পড়ে। হারিয়ে যাওয়া ছাত্র রাজনীতির সর্বোচ্চ হাতিয়ার ছিল লেখাপড়া, বইখাতা, কাগজ-কলম, লাঠি-বিড়ি। আর এখনকার ছাত্র রাজনীতির হাতিয়ার হল- মদ-গাঁজা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভাড়ায় শক্তি প্রদর্শন, মাদক বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, হলে সিট বাণিজ্য, ইভটিজিং, নারী নির্যাতন, কাটা রাইফেল, রিভলবার। এগুলোর পরে যদি সম্ভব হয় তাহলে কিছুটা লেখাপড়া আর নামকাওয়াস্তে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শুধু ছাত্রত্ব ধরে রাখার জন্য। তাও নাকি বর্তমান সময়ের ছাত্রনেতারা নিয়মিত করেন না। যথাসময়ে পাস করে বের হয়ে গেলে নাকি পদ-পদবিপ্রাপ্ত নেতা হওয়া যায় না। যারা বর্তমান ছাত্র রাজনীতির নেতৃত্বে রয়েছে, তাদের প্রথমেই হতে হবে অপেক্ষাকৃত মেধাশূন্য অথবা ভান করতে হবে কিছুই জানে না এমন, হতে হবে ভালো চামচা, থাকতে হবে পেশিশক্তি ও সন্ত্রাস সৃষ্টির সামর্থ্য। এগুলো থাকলেই উপরের আশীর্বাদ পাওয়া যাবে এবং উজ্জ্বলভবিষ্যতের নিশ্চয়তা মিলবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছাত্র রাজনীতি আমাদের দেশ ও জনগণের সামনে দেখা দিয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে। জনগণ এখন আর ছাত্র নেতাদের আগের মতো সম্মান করে না। ছাত্র রাজনীতিকেও জনগণ সহজভাবে ও ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে না। জনগণ ছাত্র রাজনীতির প্রতি ভীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছে। এর কারণ কী? তরুণ ও মেধাবী ছাত্ররা আজকে কেন রাজনীতিবিমুখ হয়ে যাচ্ছে? কিছু শিক্ষাঙ্গনে আজকে কেন লিখে দেয়া হচ্ছেছাত্র রাজনীতি মুক্ত’? বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বলে, ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে একজন ছাত্র নিজের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ, নিজেকে সন্ত্রাসী বা চোরাকারবারির বা অন্যের হাতের ক্রীড়নক হিসেবে গড়ে তোলে।

বর্তমানে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রদের সাধারণ মানুষ আদর্শহীন, চরিত্রহীন, অর্থলোভী, মাস্তান, চাঁদাবাজ, অস্ত্রবাজ, মূর্খ সর্বোপরি সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর মানুষ বলে মনে করেন। কিন্তু এ কথাও সত্য এবং ইতিহাস দ্বারা প্রমাণিত, ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমেই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রাথমিক ভিত তৈরি হয়েছে এবং আদর্শবান ছাত্র নেতারাই রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সেই ৫২, ৬২, ৬৯, ৭১, ৯০-এর ঐতিহ্য আজ অনুপস্থিত। বর্তমানে তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রতিযোগিতা ছাড়া কোনো ভালো কাজ সফলতার মুখ দেখে না। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, সরকার ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ছাত্র সংগঠন এমন অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি করে রাখে যেখানে প্রতিযোগিতার কোনো পরিবেশ থাকে না। যেখানে ভিন্নমত, ভিন্নদল থাকবে না, সেখানে মেধাবী নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে না। ছাত্র রাজনীতিকে আবার দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নেতৃত্বের সূতিকাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে সব রাজনৈতিক মত ও দলের সহাবস্থান নিশ্চিত করা জরুরি। প্রতিদ্বন্দ্বি^তা নয়, প্রতিযোগিতার সংস্কৃতিই পারে ছাত্র রাজনীতিকে সাধারণ মানুষের কাছে আবার গ্রহণযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে। রাতের আঁধার যতই গভীর হোক না কেন, সকালের সূর্য অবশ্যই উদিত হবে। আমার বিশ্বাস নির্লোভ, আপসহীন ত্যাগের মানসিকতাসম্পন্ন দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাদের নেতৃত্বে অচিরেই ছাত্র রাজনীতি সুষ্ঠু ও সঠিক ধারায় ফিরে আসবে আর তখনই ছাত্র রাজনীতির প্রতি জনগণ আস্থাশীল হবে।



নেইমারের বেড়ে উঠার কাহিনী

ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। ফুটবল হচ্ছে ব্রাজিলের শিল্প এখানে জম্ম নিয়েছে ফুটবল যাদুগর কালোমানিক খ্যাত পেলে। ২০১৮ সালের এক জরিপে দেখা যায় শুধু ব্রাজিলেই রয়েছে ২২ হাজার বিশ্বমানের ফুটবল খেলোয়াড়। প্রতি বছর ব্রাজিলে তৈরী হচ্ছে নতুন নতুন নান্দনিক ফুটবলার। যাদের বেশি দামে বিক্রী করা হয় ইউরোপের নামি-দামি ক্লাবগুলোতে।



নেইমারের ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। ২০০৩ সালে নেইমার খেলা শুরু করেছিলেন পর্তুগুয়েসা স্যান্টিস্টা নামের ক্লাবের এক যুব দলে। তার খেলা দেখে মুগ্ধ হয় সকলে। ফলে ব্রাজিলের প্রথম সারির ক্লাব স্যান্টোস এফসি-এর চোখে পড়ে যায় এই খুদে। নেইমার এবং তার পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেন যে সে এখন স্যান্টোস এফসিতেই খেলবেন। সেই সময় নেইমার সান্তোসের হয়ে জুনিয়র দলে খেলছিল। জুনিয়র দলে থাকা অবস্থায় নেইমার পেশাদার ফুটবলে আবির্ভাব। নেইমারের ফুটবল কারিসমা দেখে সর্বপ্রথম নজর কাড়ে ইংল্যান্ডের নামকরা ক্লাব ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড এরঅবিশ্বাস্যভাবে ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড নেইমারকে কেনার জন্য ১২ মিলিয়ন পাউন্ডের অফার দেয়। কিন্তু তার নিজ দেশের ক্লাব সান্তোস নেইমারকে হাতছাড়া করতে নারাজ। সান্তোস সুতরাং ১২ মিলিয়ন পাউন্ডের অফার ফিরিয়ে দেয়। বিশ্বফুটবলের জগতে রাতারাতি  পরিচিত হয়ে গেল নেইমার


নেইমারের পুরো নাম Neymar da Silva Santos Júnior. ফেব্রুয়ারী ১৯৯২ সালে সাওপাওলোর মোগি ডাস ক্রুজ শহরে জন্মগ্রহন করেন। নেইমার ডা সিল্ভা জন্মগ্রহণ করেন সাও পাওলো, ব্রাজিলে সিনিয়র নেইমার ডা সিল্ভা এবং মাতার নাম নান্দিনি সান্তোস। নেইমারের বাবা ছিলেন একজন ফুটবলার সেই সুত্রে বাবা তার ছেলেকে নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন এবং পরবর্তীতে নেইমারের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। নেইমারের শৈশব হতে শুরু  করে তার খেলোয়াড় জীবনে তার পিতার ভূমিকা অতুলনীয় তাঁর পিতা সব সময় নেইমারের সঙ্গ দিতেন এবং তার পাশে থেকে সব কিছুর পরামর্শ দিতেন। নেইমার তার পিতার আদর্শেই বড় হয়েছেন এবং পিতাকে সব সময়ের বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেছেন। ২০০৩ সালে, নেইমার তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাঁও ভিসেন্তে চলে আসেন। সেখানে তিনি যুব পর্তুগিসা সানতিস্তাতে খেলা শুরু করেন। ২০০৩ এর শেষে তাঁরা সান্তসে চলে আসেন। সেখানে নেইমার সান্তস ফুটবল ক্লাবে যোগ দেন।

১৪ বছর বয়সে নেইমার রিয়্যাল মাদ্রিদের যুব টিমে খেলার অফার পান কিন্তু স্যান্টোস এফসি নেইমারকে হাতছাড়া করতে নারাজ। অন্যদিকে নেইমারের উজ্জ্বল ভবিশ্যতের হাতছানি। কিন্তু সান্টোস বোনাস ঘোষণা দিয়ে নেইমারকে বেঁধে ফেলেননেইমার এরই মধ্যে প্রচুর পরিমানে ফুটবল ম্যাচ খেলতে শুরু করেন। ২০১০ সালে নেইমার ১৯ ম্যাচে ১৪ টি গোল করে দলকে Campeonato Paulista league জিততে সাহায্য করেন। তার এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য তাকে লিগের বেস্ট প্লেয়ার হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। একই বছরে ক্লাবের হয়ে মোট ৪৮ টি ম্যাচ খেলেন
 
নেইমারের এই সাফল্যের খবর বিদেশি ক্লাবগুলির কাছেও পৌছে যায়। নেইমারের কাছে সুযোগ চলে আসে স্পেন বা ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলিতে খেলার। কিন্তু স্যান্টোস নেইমারকে ছাড়তে রাজি নয়। তাই তার বেতনের ৫০% বৃদ্ধি করে দেয় ক্লাবটি।

বিশ্বে নামী-দামী খেলোয়াড়ের কথা আসলে নেইমারের নামটা বাদ যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। পৃথিবীর পরিচিত মুখের মধ্যে নেইমার অন্যতম। তার ফুটবল স্কিলে নতুনত্ব এবং উইং দিয়ে অ্যাটাক ভক্তরা দারুন উপভোগ করে। ফুটবল জগতে তার বিশাল ভক্ত তৈরী হয়েছে। নাইকি, প্যানাসনিক, স্যান্টানডার, ভগসওয়াগেন এর মতো বিশ্বসেরা কোম্পানীগুলো তার পিঁছনে টাকা খরচ করছে।
 ২০১০ সালের ১০ আগষ্ট নেইমারের জন্য শুভদিন। এই দিন দেশের জার্সি গায়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে তার অভিষেক হয়। অভিষেক ম্যাচে তার ক্রীড়ানৈপুন্য ও ডিভিলং- সকলের নজর কেড়ে নেন। সেই সুবাধে নেইমার দলের নিয়মিত প্লেয়ার হিসেবে নিজের আসন পাকাপোক্ত করে নেন। দেশের হয়ে ২০১২ সালে নেইমার অলিম্পিক থেকে সিলভার মেডেল নিয়ে নেন এবং অলিম্পিকে ০৩ টি গোল করে বিশাল সম্মান অর্জন করেন। নিজ দেশে অনুষ্ঠিত ২০১৩ সালে কনফেডারেশান কাপগোল্ডেন বল জিতে নেইমার।


Categories

Unordered List

Sample Text

Blog Archive

Powered by Blogger.

Comment System

Disqus Shortname

Fixed Sidebar (true/false)

Full-Width Version (true/false)

Nature

test

Comments

Government Jobs

Definition List

Unordered List

PageNavi Results No.

Post Top Ad

Search This Blog

Post Top Ad

Your Ad Spot

Post Top Ad

Your Ad Spot

Find Us On Facebook

Random Posts

Social Share

Flickr

Banking Jobs

AD BANNER

Home - Recent Posts (show/hide)

Sponsor

Recent comments

Banking Jobs

Sponsor

ads

Contact Form

Name

Email *

Message *

Responsive Ads Here

Recent in Sports

Ordered List

captain_jack_sparrow___vectorHello, my name is Jack Sparrow. I'm a 50 year old self-employed Pirate from the Caribbean.
Learn More →

Sample Text

Recent Posts

Ads Here

Events

test

Business

Recent Comments

Pages

Responsive Ads Here

Facebook

Popular Posts

Popular Posts

Recent Posts

Ads Here

Text Widget