মোবাইল কিংবা
কম্পিউটারের কিছু প্রসেসিং এর মাধ্যেম পণ্য চলে যায়
ঘরে। শুধু ই-কমার্স
নয়, এর বাইরেও ইন্টারনেটে আছে নানা ধরনের ব্যবসা। আপনার
চারপাশেই ছড়িয়ে আছে সেসব ব্যবসার কৌশল। বুদ্ধি করে নেমে যেতে পারেন নতুন কোনো
ধারণা নিয়ে। যেকোনো কাজ
কিংবা ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অবশ্যই বিভিন্ন জনের কাছ থেকে
পরামর্শ নিতে হবে। এতে অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে লাভবান হওয়া যায়।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অনলাইনে ব্যবসা বর্তমানে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে কলেজ ইউনিভার্সিটি পড়ৃয়ারা এ ব্যবসায় এগিয়ে আসছে এবং তাদের পড়া লেখার খরচ কিছুটা হলেও যোগান দিতে পারছে। আবার অনেকে খুভ ভালভাবেই চলে যাচ্ছে। এ ধরনের অনেকের সাথে আলোচনা করে জানতে পেরেছি এতে নাকি প্রচুর ধৈর্য লাগে। তাছাড়া সরকারের পৃষ্টপোষকতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অনেকে ছাত্র জীবন শেষ করে অনলাইন ব্যবসাকেই পেশা হিসাবে নিতে আগ্রহী দেখা যায়। এ ব্যাপারে তাদের যুক্তি হলো --
১। ছাত্র জীবন শেষ করে দুয়ারে দুয়ারে চাকুরীর জন্য ধর্না দেয়া বড়ই কষ্টের। তাছাড়া যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরী পাওয়াও দুষ্কর।
২। অনলাইনে বেচাকেনার পদ্ধতিটা খুবই সহজ এবং সম্ভবত জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন বিজনেস পেজ। এখানে যে কেউ কোন ধরণের টাকাপয়সা খরচ না করে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি বিজনেস পেজ খুলে পণ্য বিক্রয় শুরু করে দিতে পারেন।
৩। অনলাইন ব্যবসায় ঝুকি ও পুজি কম তাই লসের সম্ভাবনাও কম। তবে একাজে এক্সপার্টদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে হবে।
ফেসবুকেও অনলাইন ব্যবসা করা যায় ----
- আমাদের দেশের অলিতে গলিতে এমন কেউ নাই যে ফেসবুক ব্যবহার করেনা। অনেকের কাছে এখনো ইন্টারনেট মানেই ফেসবুক। রাত-দিনের বেশিরভাগ সময়ই আমরা ফেসবুক ব্যবহার করে থাকি। তাই ফেসবুকের মাধ্যেম পন্যের বিস্তারিত বিবরণ সহযেই অধিক সংখ্যক লোকের কাছে উপস্থাপন করা যায়।
- ফেসবুক চালাতে তেমন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন হয়না। ফেসবুক স্ট্যাটাস আপডেট এবং ফটো আপলোড করতে পারে এখানে যেকোন কেউ ব্যবসায়িক পেজ খুলে পণ্য বিক্রয় শুরু করতে পারেন।
- কম-বেশি সবাই ফেসবুকে লাইক বা কমেন্ট দিতে কৃপনতা করেনা। এ কারনে নিজের বিজনেস পেজে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কে দৃষ্টি আকর্ষন করা খুবই সহজ।
- ফেসবুকে ক্রেতা পণ্য ক্রয়ের জন্য কমেন্ট বা ইনবক্স মেসেজ করে থাকেন। ক্রেতার জন্য পণ্য অর্ডার করা প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ, একই ভাবে বিক্রেতার জন্য অর্ডার প্রসেস করার কাজটিও সহজ।
- টাকা খরচ করে ফেসবুক পোস্ট বুস্ট করে অনায়েশেই সম্ভাবনাময় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা যায়। তবে বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন : পেমেন্ট সমস্যা, টেকনিক্যাল সমস্যা ইত্যাদি।
ই-কমার্স
ই-কমার্স
বাংলাদেশে বেশ জনিপ্রয়তা লাভ করেছে। শিক্ষিত ব্যবসায়ী / ব্যবসা করতে ইচ্ছুক লোকের
কাছে ই-কমার্স বেশ সমাইদ্রিত। তাই
বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। এই ব্যবসায়ে অনেকে আগ্রহী হলেও
ই-কমার্স সম্পর্কে ধারনা ও পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকার কারনে আশানুরুপ সাফল্য লাভ
করতে পারছেনা।
ই-কমার্স
ব্যবসায়ে সাফল্য অর্জনের জন্য নিম্নবর্ণিত বিশেষ দিক নির্দেশনা-
প্রোডাক্ট
ও সার্ভিস নির্ধারণ: এই সাইটে ব্যবসা করতে হলে সর্ব
প্রথম একটি পরিপূর্ণ সাইট। অতপর কি পণ্য নিয়ে ব্যবসা করবেন তা নির্ধারণ।
ই-কমার্সের
জন্যতো বটেই বাজার বিশ্লেষণ যে কোন ব্যাবসার জন্য অধিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভোক্তার
চাহিদা, অবস্থান, বাজারের পরিধি ইত্যাদি যাচাই করার নামই বাজার
বিশ্লেষন। আপনি যে পণ্য বিক্রয় করতে চাচ্ছেন তার চাহিদা ও বাজারের পরিধি নিয়ে
বিশ্রেষন করেই ব্যবসায় চালু করতে হবে। ব্রেক-ইভেন বিষয়টি
আর্থনীতি এবং ব্যাবাসা উভই ক্ষেত্রেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসার জন্য স্থায়ী/ নিদ্রিষ্ট খরচ ও পরিবর্তনশীল খরচ উভয়
বিবেচনায় রাখতে হবে।
ইকমার্স
ব্যাবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে Funding । কি
পরিমান মূলধনের প্রয়োজন, কি পরিমান বিনিয়োগ করবেন, কি পরিমান ফান্ড বেক-আপ দিতে পারবেন এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে
বিবেচনায় রাখতে হবে।
লাভ-লোকসান
নির্ধারন, পণ্য বিক্রয় উৎপাদন/ক্রয় খরচ, বিবিধ ব্যয় ও লাভ হিসাব করে পন্যের মূল্য
নির্ধারণ করতে হবে। আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে বিক্রয়। তাই আপনাকে যাবতীয়
খরচাদি ক্যালকুলেশন করেই ব্যবসায় করতে হবে।
ই-কমার্সে
বিক্রয় বাড়াতে প্রচারই একমাত্র মাধ্যম। কারণ কথায় আছে প্রচারেই প্রসার, তাই যত
বেশি প্রচার তত বেশি লাভ।
আরেকটি
গুরত্বপুর্ণ বিষয় হচ্ছে গ্রাহক সেবা। গ্রাহকের হাতে নির্ধারিত সময়ে দ্রুততার সহিত
পণ্য পৌছানোর জন্য দক্ষ জনবল নিয়োগ ই-কমার্সের মূল্য উপাদান। তাই এই ব্যবসার
জন্য দক্ষ জনবল অতীব জরুরী। প্রতি সপ্তাহে আপনার মার্কেটিং চ্যানেল গুলোর আপ-ডাউন রিপোর্ট তৈরি করে তুলনা করুন।
- ব্যবসার গতিপ্রকৃতি বোঝার জন্য বিভিন্ন insights এবং analytics যেমন সেলস রিপোর্ট, অর্ডার রিপোর্ট, ট্রানজেকশন রিপোর্ট ইত্যাদি নিজের ওয়েবসাইটে যে কোন কাস্টমাইজেবল ফরমেটে পাওয়া যায়।
- আপনার ব্যবসা যত বড়ই হোক না কেন, নিজের ওয়েবসাইটকে আপনি সেই অনুযায়ী স্কেল আপ করতে পারবেন অনায়েশেই।
যেহেতু সম্পূর্ণ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে
থাকে তাই স্বাধীনভাবে ব্যবসা করার প্রথম এবং প্রধান মাধ্যম নিজস্ব ই-কমার্স
ওয়েবসাইট।
ইকমার্স বা ই-বিজনেস শুরু করার পূর্বে অবশ্যই সময় নিয়ে
বিজনেস প্লাটফরম তৈরী করতে হবে। নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা
দিয়ে আপনার বিজনেস প্লাট ফর্মের সাথে
যুক্ত করে আরো ডেভেলাপ করুন। শত শত ই-কমার্স সাইট
রয়েছে আপনাকে সেবা দেয়ার জন্য, তাই অনলাইনে সার্চ করে বিভিন্ন ধারনা ও সোর্স
স্টাডি করুন। তাছাড়া অভিজ্ঞদের পরামর্শ অবশ্যই নিবেন, যারা এ ব্যবসায়ে সফলতা অর্জন
করেছে। আশা করি আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আপনার সামান্য হলেও উপকারে আসবে।