কালোজিরার
আশ্চর্য ক্ষমতা
black seed/কালো বীজটি যুগ যুগ ধরে আমরা
বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে আসছি, তবে মানুষ কেবলমাত্র এটির গুনাগুন ও বিষদ ব্যবহার সম্পর্কে জানতে বা শিখতে শুরু করেছে। এটা কতটা উপকারী, বিষ্ময়কার ও অলৌকিক গুন তা কেবলমাত্র আমরা জানতে পেরেছি। black seed/কালো জিরা (নিগেলা সটিভা প্ল্যান্ট থেকে) বিভিন্ন জটিল সমস্যাগুলির
বিরুদ্ধে অসাধারণভাবে লড়াই করে তা এক বিষ্ময়কর বিষয়। জিরা শুধু রান্নায় নয়, এই স্পাইসি মশালা যে আপনার শরীরের অকল্পনিয় উপকার করে
থাকে। নিম্নে কালো জিরার বেশ কয়েকটি পরীক্ষিত গুনাগুন বর্ণনা করা হল। যা যথাযথ
ব্যবহার করে আমরা সুফল পেতে পারি।
ধর্মীয় দৃষ্টিতে কালোজিরা : বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, “তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত সর্ব রোগের মুক্তি রয়েছে”।হযরত আনাস
(রাঃ) বর্ণনা করেছেন,
“নবী করিম (সঃ) বলেছেন, “যখন রোগ- যন্ত্রণা খুব বেশি কষ্টদায়ক হয় তখন এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা নিয়ে খাবে তারপর পানি ও মধু সেবন করবে”। -মুজামুল আওসাতঃ তাঁবরানি। তিরমিযি,
বুখারি, মুসলিম। হযরত কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, “প্রতিদিন ২১ টি কালোজিরা ১ টি পুটলি তৈরি করে পানিতে ভিজাবে এবং পুটলির পানির ফোঁটা এ নিয়মে নাশারন্ধ্রে (নাশিকা, নাক) ব্যবহার করবে- “প্রথমবার ডান নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। দ্বিতীয়বার বাম নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং ডান নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। তৃতীয় বার ডান নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা ও বাম নাকের ছিদ্রে এক ফোঁটা”। গুণাগুণ জেনে নিতে দোষ কী? আমাদের জন্য কি কি ঔষধী গুণ আছে এই কালোজিরাতে।
ওজন কমাতে :
(ক) কয়েক চামচ মধু ও
তিন গ্রাম জিরা গুঁড়ো এক গেলাস পানিতে ভালো করে মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে ওজন কমাতে
যথেষ্ট কাজ করবে।
(খ) জিরা গুড়া ভেজা পানিও
পেটের মেদ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। টানা ১০/১৫ দিন জিরা পানি পান করলে নিশ্চিত
ওজন কমবে। তাছাড়া জিরা গরম পানিতে ফুটিয়ে খালি পেটে লাল পানি পান করলেও পেটের
চর্বি কমিয়ে সুন্দর আকর্ষনীয় করবে।
যৌবন ধরে রাখতে জিরা : ১৫-১৬ টি কালোজিরা ছোট ১ টি পিয়াজ ও ২ চামচ
মধু সহ বিকালে বা রাতে খেলে চির যৌবন রক্ষা হয়।
ডায়াবিস নিয়ন্ত্রনে: ডায়াবেটিকস রোগিরা এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা এক
গ্লাস পানির সঙ্গে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেয়ে দেখুন, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে একসময় ডায়াবেটিকস কমে যাবে। সকালে
খালি পেটে ১২-১৩ ফোটা কালোজিরার তেল ও ১৫-১৬ ফোঁটা মধু খেলে ডায়াবেটিসের উপকার হয়।
প্রসুতি
মায়েদের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে : যে সব প্রসুতি মায়েদের বুকের দুধ কম তাদের বুকের
দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন রাত্রে শোবার আগে ৫-১০ গ্রাম কালোজিরা গুড়া করে দুধের সঙ্গে খেতে থাকুন। ইনশাল্লাহ মাত্র
১০-১৫ দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে। তাছাড়া কালোজিরা
ভর্তা করেও ভাতের সঙ্গে খেলেও উপকার পারেন।
বাত রোগে : যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে কালোজিরার জুড়ি নেই। কালোজিরার তেল হালকা গরম
করে নিয়ে ব্যথার জায়গায় মালিশ করুন, ব্যথা সেরে যাবে।
বিশেষ করে বাতের ব্যথায় বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায় ১০/১২
ফোঁটা কালোজিরার তেল গরম পানিতে মিশিয় খেলে বাত রোগের উপকার হয়।
দাঁতের
ব্যথায়: দাঁত ব্যথা হলে, মাঢ়ি ফুলে
গেলে বা রক্ত পড়লে কালোজিরায় উপকার পাওয়া যায়। পানিতে কালোজিরা দিয়ে আগুনে
ফুটিয়ে নিন। ফুটানো পানি তাপমাত্র কমে উষ্ণ অবস্থায় এলে তা দিয়ে কুলি করুন। এতে
দাঁত ব্যথা কমে যাবে, মাঢ়ির ফোলা বা রক্ত পড়া বন্ধ হবে।
স্মরন শক্তি বৃদ্ধিতে : নিয়মিত কালোজিরা খেলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। যার কারনে
স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সঙ্গে এটি প্রাণশক্তি বাড়ায় ও ক্লান্তি দুর করে
কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে।
0 comments:
Post a Comment