সাজেক ভ্যালীঃ
ভ্রমন পিপাসুদের জন্য সাজেক ভ্যালী
একটি অন্যতম দর্শনিয় স্থান। প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্য্যের আঁধার এই সাজেক ভ্যালী। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত ।
সাজেক হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন । সাজেকের আয়তন ৭০২ বর্গমাইল,সাজেক ভ্যালির নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে আপনি
অনুভব করবে প্রাশান্তির নির্মল ছায়া। সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলার সর্ব উত্তরের
ভারতীয় সীমান্ত মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। আয়তনের দিকে থেকে সাজেক বাংলাদেশের
সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। আয়তন প্রায় ৭০২ বর্গমাইল। সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে রাঙামাটির লংগদু, পূর্বে ভারতের মিজোরাম আর
পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা। যদিওবা সাজেক রাঙামাটি জেলায় কিন্তু যাতায়াত সুবিধার দিক বিবেচনা করলে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হয়ে সহজ। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৭০
কিলোমিটার আর দীঘিনালা থেকে ৪৯ কিলোমিটার ।
যেভাবে যেতে হবে : খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা সেনাবাহিনীর
ক্যাম্প পার হয়ে সাজেক যেতে হয়। সেনাবাহিনীর ক্যাম্প পার হয়ে ১০নম্বর বাঘাইট হাট
পুলিশ ও সেনাবাহিনী ক্যাম্প। এখান থেকেই আপনাকে সাকেজ যাওয়ার মূল অনুমতি নিতে হবে।
তারপর কাসালং ব্রিজ।যা কাসালং নদীর উপরে অবস্থিত। এর পর পড়বে টাইগার টিলা আর্মি
পোস্ট ও মাসালং বাজার। সাজেকের প্রথম গ্রাম রু্ইলুই পাড়া যার উচ্চতা সমতল থেকে উচ্চতা ১৮০০ ফুট। এই গ্রামের
আদি জনগোষ্ঠী লুসাই,
পাংকুয়া এ ত্রিপুরারও বাস করে। রুইলুই পাড়া থেকে অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে পৌছতে
পারবেন প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য সাজেক ভ্যালী। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজিবি ক্যাম্প।
হ্যালিকপ্টার অবতরণের জন্য এখানে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থাও রয়েছে।
যাতায়াত ব্যবস্থা :
ঢাকা
থেকে শ্যামলী , হানিফ
ও অন্যান্য পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন । এছাড়া BRTC
ও সেন্টমার্টিন্স পরিবহনের
এসি বাস খাগড়াছড়ি যায় । শান্তি পরিবহন,
তাছাড়া সায়দাবাদ থেকে সকাল ৮ টায়
একটি গাড়ি খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম
থেকেও খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন । BRTC এসি বাস
চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের অক্সিজেন থেকে কিছুক্ষণ পর পর গাড়ী ছাড়ে।
খাগড়াছড়ি থেকে চান্দের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে
সাজে ভ্যালিতে যাওয়া যায়। একটি গাড়িতে অনায়াসেই ১৫ জন যেতে পারবেন। চান্দের গাড়ি আপ-ডাউন
রিজার্ভ ভাড়া নিবে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। আর লোকজন কম হলে খাগড়াছড়ি শহর থেকে
দীঘিনালা পর্যন্ত বাসে যেতে পারেন। এজন্য জন প্রতি ৪৫ টাকা লাগবে। দীঘিনালা থেকে
মোটর সাইকেল রিজার্ভ নিয়ে সাজেক ঘুরে আসতে পারেন। প্রতি মোটর সাইকেলে এক হাজার
থেকে এক হাজার দুই শত টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিয়ে থাকে।
থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা : খাগড়াছড়ি
শহরে বা দীঘিনালাতে থাকার জন্য হোটেলের ব্যবস্থা রয়েছে। এ সকল হোটেলে আপনি বিভিন্ন
দামের রুম ভাড়া নিতে পারবেন। খাওয়া দাওয়ার জন্যও সুব্যবস্থা রয়েছে।
তবে যারা দুর থেকে এসে থাকতে চান তাহলে অগ্রিম বুকিং দিতে হবে নয়তো থাকার যায়গা যোগার করা কষ্টকর হবে। সাজেকে থাকার জন্য সেনাবাহিনীর দুইটা রিসোর্ট আছে। তাছাড়া সেখানে অনেক ছোট-খাট কটেজ পাওয়া যায়।
সাজেক রিসোর্টঃ মোট ৪ টি রুম
আছে। আর্মি অফিসারদের জন্য ভাড়া ৩০০০-৫৫০০, সরকারী
কর্মকর্তাদের জন্য ভাড়া ৪৫০০-৮০০০, সাধারন
জনগনের জন্য ভাড়া ১২০০০-১৫০০০ টাকা প্রতি রাতের জন্য।
যোগাযোগ ০১৭৮৩৯৬৯২০০।
রুনময় রিসোর্টঃ মোট ৫ টি রুম আছে। আর্মি অফিসারদের জন্য ভাড়া ১৩০০-১৭০০, সরকারী
কর্মকর্তাদের জন্য ভাড়া ২৬০০-৩২০০, সাধারন
জনগনের জন্য ভাড়া ৪৫০০-৫০০০ টাকা প্রতি রাতের জন্য।
যোগাযোগ ০১৮৬৫৬৮৮৭৭।
রুইলুই পাড়া ক্লাব হাউসঃ এখানে ১৫ জন থাকতে
পারবেন। ভাড়া ২০০ টাকা জনপ্রতি।
যোগাযোগ ০১৮৩৮৪৯৭৬১২, ০১৮৬০১০৩৪০২।
মেঘ মাচাং: সাজেকের বেস্ট
রিসোর্টের স্বীকৃতি প্রাপ্ত। এখানে
থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
যোগাযোগ ০১৮২২
১৬৮৮৭৭ রুম প্রতি ৩০০০ টাকা ভাড়া । এক রুমে চারজন থাকতে পারবেন ।
আলো রিসোর্টঃ মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে এখানে মোট ৬ টি রুম। ভাড়া ৮০০-১২০০ টাকা
প্রতি রাতের জন্য।
যোগাযোগ ০১৮৬৩৬০৬৯০৬।
ইমানুয়েল
রিসোর্টঃ ডাবল বেডরুম ১৫০০ টাকা।
চারজন থাকার
মতো রুম ২৫০০ টাকার মধ্যেই পাবেন। আগে বুকিং করে যাওয়া ভালো।
রুইলুই পাড়াতে অনেক পাবলিক ঘর পাওয়া যায়, যেখানে
নামমাত্র খরচে জনপ্রতি ২০০ টাকা দিয়ে থাকা যাবে।
লুসাই
কটেজঃ এখানেও মোটামুটি কম খরচে থাকতে পারবেন।
যোগাযোগ: ০১৮৭৯৩০০৫০২।
মেঘ পুন্জিঃ সাজেক ভ্যালীর
অন্যতম একটি সুন্দর রিসোর্ট।
যোগাযোগ
নাম্বার ০১৮১৫৭৬১০৬৫ , ০১৯১১৭২২০০৭
জুমঘরঃ জুমঘরও একটি মানসম্মত রিসোর্ট ।
যোগাযোগ : ০১৮৮৪২০৮০৬০
রক প্যারাডাইসঃ সাজেক ভ্যালীর কংলাক পাড়াতে এ কটেজটি। এখানে অবস্থান করে প্রাকৃতিক রহস্য উপভোঘ করতে পারা
যায়।
যোগাযোগ :
০১৮৪২৩৮০২৩৪ নাম্বারে ।
খাবার দাবার :
সাজেকে খাওয়ার জন্য তেমন কোন রেস্টোরেন্ট নেই। যেই রিসোর্ট
এ উঠবেন তাদের কে বলে রাখলে তারা খাবার ব্যবস্থা করে রাখে।
খাবার মেনুতে আপনি সকালে ডিম খিচুড়ি (তাতে ডাল এর দেখা পাবেন কিনা সন্দেহ) বা
ডিম পরোটা, দুপুরে ও রাতে ভাত,
মুরগী আর ডাল ছাড়া আর কিছু তেমন পাবেন না।
তবে সেখানকার হেডম্যান এর মেয়ে মারতি দিদির একটা রেস্টুরেন্ট আছে,
সেখানে খেতে পারেন,
খাবার মান ও স্বাদ ভাল।
রাতে বার বি কিউ পার্টি করতে চাইলে আগে থেকে ব্যবস্থা করে
যেতে হবে। সেক্ষেত্রে দিঘিনালা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে সাথে নিয়ে
যেতে হবে।
ফেরার সময় খাগড়াছড়ি শহরের সিস্টেম রেস্তোরায় রাতের খাবার খেতে পারেন। খাগড়াছড়ি শহরের কাছেই পানখাই পাড়ায় এই ঐতিহ্যবাহী
খাবারের রেস্তোরার অবস্থান । এখানে খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে পারবেন । ব্যাম্বো চিকেন খেতে চাইলে আগে থেকে অর্ডার করে রাখতে হবে।যোগাযোগঃ
০৩৭১-৬২৬৩৪ , ০১৫৫৬৭৭৩৪৯৩ , ০১৭৩২৯০৬৩২২ ।
0 comments:
Post a Comment